আজ মঙ্গলবার, ৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কাকে রেখে কাকে বাদ

বিশেষ প্রতিবেদক

চন্দন শীল বন্ধু। শাহ নিজাম ডান হাত। জাকিরুল আলম হেলাল ও শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া সাজনুরও গুরুত্ব রয়েছে তার কাছে। মোদ্দা কথায় তারা সবাই শামীম ওসমানের লোক হিসেবে পরিচিত। সবার চাওয়াও এক। আর এখানেই বেধেছে গন্ডগোল। তাদের মধ্যে কাকে রেখে কাকে বাদ দিবেন তিনি ?
মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি চন্দন শীল আওয়ামী লীগ তথা শামীম ওসমানের জন্য দিয়েছেন অনেক। ২০০১ সালের ১৬ জুন অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তার। চাষাঢ়া আওয়ামী লীগের অফিসে বোমা হামলায় দুই পা’ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। সূত্র মতে, ‘৯৬ থেকে ২০০১ সালে শামীম ওসমান এমপি থাকাকালীন চন্দন শীল ছিলেন তার ব্যক্তিগত সহকারী। আবার ব্যক্তি জীবনে দুইজনে বন্ধু।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম। ‘৯৬’র আওয়ামী লীগ আমলের শেষের দিকে তার নামের পেছনে ভিন্ন রকম খেতাব ছিলো। হকার ইস্যু ও একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি এ আমলেও বেশ আলোচিত। তবে সব কিছু ছাপিয়ে শামীম ওসমানের ডান হাত হিসেবেই পরিচিত তিনি।
ছাত্র জীবন থেকেই ঝানু বক্তার পরিচিতি পেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল। আর শহর যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ভূঁইয়া সাজনুর খ্যাতি রয়েছে সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য। এ দুই ভাইয়ের নামের পাশেও শামীম ওসমানের অনুগত শব্দটি বেশ পোক্তভাবে রয়েছে। তবে এ পরিচয়ের পাশে আরও একটি নাম যুক্ত হয় তাদের সাথে। বিলুপ্ত নারায়ণগঞ্জ শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত গোলাম সারওয়ার তাদের বড় ভাই।
কেউ বন্ধু, কেউ অনুগত কারও বা রয়েছে ভিন্ন রকম পরিচয় তবে শেষতক তাদের সবাইকে চেনা হয় আওয়ামী লীগ নেতা ও এমপি শামীম ওসমানের অনুগত হিসেবেই। এ নেতার সভা সমাবেশ সফল করতে তারা উদ্যোগী হন, তার পাশেই তাদের দেখা যায়। সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ রয়েছে এ নেতাদের। এরমধ্যে শাহ নিজাম ও সাজনু নিজের অনুগতদের কাছে নির্বাচন করার বিষয়টি বলেছেনও। এর আগে শোনা গিয়েছিলো হেলাল নির্বাচন করবেন। তবে সাজনু প্রার্থী হলে হেলাল হবেন না বলে জানা গেছে। অপরদিকে চন্দন শীল নির্বাচন করতে চায় অনেক আগে থেকেই তবে তিনি প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোন কথা বলেন না। দলীয় সূত্র জানায় তারা ছাড়াও আরও অনেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চায়। তবে বাধ সেধেছে একটি মামলা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবু চন্দনশীল বলেন, সদর উপজেলায় মামলার কারণে নির্বাচন হচ্ছে না। যারা নির্বাচন করতে আগ্রহী এবং ভোটার যদি বিক্ষুব্দ হয় সেক্ষেত্রে নির্বাচন হতে পারে। সদর উপজেলা নির্বাচন হলে আপনি প্রার্থী হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রার্থী না। তবে যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের সকলের প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা আছে।
নারায়ণগঞ্জ শহর যুব লীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইঁয়া সাজনু জানান, সদর উপজেলা নির্বাচন হওয়ার দরকার তবে এ মুহূর্তে মানুষ করোনা নিয়ে আতংকে আছে। আমাদের উচিত মানুষকে সচেতন করা। এখন নির্বাচন নিয়ে কোন ভাবনা নয়।
সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন বন্ধ রয়েছে একেবারে সাধারণ তিনজন মানুষের করা একটি রিটের জন্য। এ তিনজনের মধ্যে প্রথমজন একেবারেই ছা-পোষা, ২য় জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ৩য় জন হোসিয়ারী শ্রমিক। তাদের কেউই রাজনীতি করেন না, বুজেন না পলিটিক্স। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস নিজের স্বার্থে এ তিনজনকে দিয়ে রিট করিয়েছেন। শোনা যায়, এ কাজে শামীম ওসমানের সায় রয়েছে। সূত্র জানায়, তিনি চাইলেই আজাদ বিশ্বাস রিট উঠিয়ে নিবে। তবে তা এখন চাইছে না শামীম ওসমান।
নিজের অনুগত ও কাছের মানুষদের মধ্যে একাধিকজন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করায় কিছুটা বিপাকে আছেন তিনি। এরমধ্যে কাকে রেখে কাকে বাদ দিবেন এ নিয়ে তিনি চিন্তিত বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ